বুধবার, মে ২৪, ২০১৭

বেকুব আলীর প্রেমিকারা(!)


_________ প্রইডিয়ট

প্রেম পাগলা বেকুব আলী
ডজন দুয়েক প্রেমে
বিষিয়ে ওঠে জীবন তবু
থাকেই না সে থেমে!
বিতৃষ্ণাতে একটা ছাড়ে
আর একটা ঠিক জোটে
নতুন প্রেমের জ্বালাতনেও
হাল ছাড়েনা মোটে!
তার সখীদের হরেক রকম
অ্যালার্জিটিক কর্মে,
বারেবারেই বিফলতার
আঘাত লাগে মর্মে!
একটা ছিল যৌনকাতর
কাজের বেলায় মৌন,
একটা ছিল ঘুমকাতুরে
ঘুম ছাড়া সব গৌন!
একটা ছিলো কুমড়োপটাশ
হাঁটতো হেলেদুলে,
একটা ছিলো পাটের কাঠি
হাগুর কালার চুলে!
একটা ছিলো বকবকানি
সিরিয়ালের পোকা,
একটা ছিলো গোমড়ামুখী
ভাব দেখানো বোকা!
একটা ছিলো ছিঁচকাঁদুনী
কথায় কথায় কান্না!
একটা ছিলো ফিল্মি ফ্রিক
প্রিয় নায়ক মান্না!
একটা ছিলো ঢঙ্গী খুবই
সবকিছুতেই ঢঙ!
একটা ছিলো বিউটি বক্স
মেকাপ করা সঙ!
একটা ছিলো মর্দা কিসিম
কন্ঠ ফাটা বাঁশ!
একটা ছিলো পেটের পীড়ায়
ভুগতো বারোমাস!
একটা ছিলো শর্ট টেম্পার্ড
মুহুর্তে অন গন!
সিজোফ্রেনিক অ্যটিটিউড
করতো সারাক্ষণ!
একটা ছিলো ভীষন মুডি
কথায় কথায় মুড!
একটা সে তো ফার্স্ট মিটিঙেই
করলো ফেলে ন্যুড!
একটা ছিলো সবজান্তা
বুঝতো দুলাইন ঢেড়!
একটা ছিলো চরিত্রহীন
পায়নি বেকুব টের!
একটা ছিলো টাইট ফিটিং-এর
একটা ছিলো ঢিলা,
একটা ছিলো শো-অফ করার
দেখিয়ে বুকের টিলা!
একটা ছিলো একরোখা খুব
সব কথা তার রাইট!
পান থেকে চুন খসলে পরে
জুড়েই দিতো ফাইট!
একটা ছিলো বেবোধ আবাল
একবারে না বোঝে!
একটা ছিলো সন্দেহ খুব
চরিত্রে খুঁত খোঁজে!
একটা ছিলো খুব পজেসিভ
স্বার্থ বোঝে আগে!
গছিয়ে নিতো সকল কিছু
যা লাগে তার ভাগে!
একটা ছিলো বদমেজাজি
আস্ত রাগের ভান্ড!
একটা ছিলো হাসতো শুধু
বাধিয়ে কুরু কান্ড!
একটা ছিলো খুঁতখুতে খুব
সব কিছুতেই উহ্!
একটা ছিলো খাশটে ভীষণ
গন্ধ! ওয়াক থুঃ!
একে একে বেকুব আলীর
বাড়ে প্রেমের লিস্টি!
চরিত্রহীন চরিত্রে তার
হরেক রঙের বৃষ্টি!
বকুব সেজে বেকুব আলীর
মিশন চলে নাইস!
মাইনক্যা চিপায় পড়বে যেদিন
সেদিন হবে সাইজ!

১৪.০৫.২০১৭

পার্থিব


______ প্রদ্যোত

যে পথটি ছিলো দূর্বাঘাসের
আমাদের খুব চেনা,
সে পথটি আজ কালো পীচে মোড়া
সওদাগরের কেনা!
যে আকাশ ছিলো দিনে নীলে নীল
রাতে আলোকিত চাঁদে,
সে আকাশ আজ কালো মেঘে ঢাকা
দিবানিশি শুধু কাঁদে!
যে বনানী ছিলো সবুজে সবুজ
ফুলে ফুলে সুবাসিত,
সে তরু লতারা শুকিয়েছে কবে
প্রানহীন ধূসরিত!
যে নদীতে ছিলো উত্তাল ঢেউ
জলের সতত ধারা,
সে নদী আজকে মরুভূমি যেন
নিষ্প্রাণ গতিহারা!
যে পাখি গাইতো ঘুমভাঙানিয়া
চির মোহনিয়া রবে,
সে পাখি কবেই উধাও হয়েছে
নাগরিক উৎসবে!
যে সময় ছিলো তোমার আমার
স্বপ্নের জালবোনা,
সে সময় গ্রাসে নিন্দিত ত্রাসে
শকুনের আনাগোনা!
যে হৃদয়ে ছিলো প্রেম ভালবাসা
শব্দিত চিরকাল,
সে হৃদয় জুড়ে জমেছে কেবল
পার্থিব জঞ্জাল!
যে তুমি আমার যে আমি তোমার
জনম জনম ধরে,
এ জনমে এসে হয়ে গেছি পর
নিজেদের অনাদরে!

২৪.০৫.২০১৭

সোমবার, এপ্রিল ১৭, ২০১৭

প্রেমানুভবে ঈশ্বর

_________________ প্রদ্যোত

অনেক রাত
অনুভবে তোমার খুব কাছাকাছি আমি
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস দখিনা বাতাসে
তোমার খোলা বাতায়ন দিয়ে
ছুঁয়ে যাচ্ছে তোমার পেলব শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
প্রতি মুহুর্তে আলোড়িত হচ্ছে অনাঘ্রাত কুমারীর তনুলতা
আমার স্বত্ত্বা তোমাতে মিলে যাচ্ছে অন্তহীন সুখে শ্বাশত ভালবাসায়

তুমি কি অনুভব করছো আমার অস্তিত্ব তোমাতে
তোমার যে উষ্ণতা ছড়িয়ে পরছে অদূরে শয়নে
তা আমার কামনার অগ্নি থেকে উৎসারিত
কল্পনায় আমার অধীর ঠোট
তোমার অনন্ত কামাগ্নির জ্বলামুখে ডুবে যাচ্ছে ক্রমাগত
পাগলপারা আমার সমস্ত আকাংখা ক্রমান্বয়ে নিমজ্জিত তোমাতে
আমার তৃষ্ণা তোমার অধরের সুধা পানে আরো বর্ধিত
সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ অবধি প্রসারিত যেন

তুমিও পাগলপ্রায় আমাকে নিবিষ্ট বন্ধনে বেঁধে পরম সুখে বিলীন
তোমার কোমনীয় পেলবতা আমাকে গ্রাস করছে গভীর আকর্ষণে
তুমি-আমি একাকার এক অখন্ড মোহে
ছুঁয়ে তোমার সব সুন্দরতম সুখ-ভাস্কর্য্য
আমি উন্মাদ যেন মহাজাগতিক সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
দলিত-মথিত পরস্পরে যেন ক্রমাগত মিলিয়ে যাচ্ছি পরম শুন্যতায়

আমাদের নিবিড়তম আলিঙ্গনে
অন্ধকার আলোকিত হয় তারার আলোকসজ্জ্বায়
সৃষ্টি হয় অগুণতি ছায়াপথ,সৌরমন্ডল, নক্ষত্র, নিহারিকা, ধুমকেতু
সহস্র গ্রহে জাগে প্রাণস্পন্দন
সবুজে সবুজে ছেয়ে যায় গ্রহের মৃত্তিকা,বাড়ে তৃণ, বাড়ে বৃক্ষ
ফুলে-ফলে সুশোভিত প্রকৃতি আনন্দে মাতে
উচ্ছ্বল বাতাস বয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে
হাজারো প্রাণে পুলক জাগে প্রেমের

প্রেমেই সৃষ্টি, মিলনেই প্রসারিত মহাজগত
বিস্তার, অতিবিস্তার, মহাবিস্তারে বর্ধিত সৃষ্টির যাবতীয় সব
এভাবেই বাড়ে আমাদের প্রেমানুভূধিতযা ঈশ্বরেরই নামান্তর
নশ্বর থেকে অবিনশ্বর সবই আমাদের প্রেম-নিসৃত
অসীম বর্ণিল বর্ণহিনতায় পরম শূন্যে আমরা একক
আবার বিভাজিত পুনঃমিলনের আকাঙ্খায়

আমাদের স্বত্ত্বার অখন্ড বিভাজনে আমরা এক থেকে দুই
এবং দুই থেকে এক হই বারবার
অনন্তে আলোক কিংবা আলোকিত অনন্ত
যা সৃষ্টি, যা স্রষ্টা, যা এক অখন্ড স্বত্ত্বা অনন্তের জ্যোতি পরমেশ্বর
তা তোমার-আমার মিলনের বিস্তৃত প্রকাশ
তোমাতে বিলীন হয়ে আমি আমাকেই পাই খুঁজে
সকল পার্থিব কোলাহলকে উপেক্ষা করে
নিরবিচ্ছিন্ন নিরবতায় বারংবার হারাই দুজনে

স্রষ্টাকে পেতে একান্ত কাছে

রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০১৭

ছেলেটি ও কচি পাতা

ছেলেটির সাথে ভীষন ভাব আমার
ওর চঞ্চলতা আর প্রত্যুৎপন্নমতিতার জন্যে
আমার সাথে ভাবের মাত্রাটা একটু বেশিই
এত্তোটুকু মানুষ, অথচ স্বকীয় পাকামিতে
কথার পিঠে কথা বলে চলে অবিরাম
মাঝে মাঝে ওর সাথে কথার পাল্লায় হেরেও যাই
ওর ইচরেপাকা কথায়
হেসে কুটিকুটি হতে হয় কখনো কখনো
মাত্রাতিরিক্ত ভাবের কারনে
প্রশ্রয়ও দিয়ে ফেলি মাঝে মাঝে
সেদিন সে নিতান্তই সাবলীল ভঙ্গিতে
আমার টবের গোলাপ গাছটার
নতুন গজিয়ে ওঠা একটা পাতা ছিড়ে ফেললো
যেন কিছুই হয়নি এমন একটা অভিব্যক্তি ওর
কেন যেন আমি ভীষন ক্ষেপে গেলাম
মুহূর্তেই ওর প্রতি জগতের বিস্বাদ নেমে এলো যেন
ছোট্ট দুষ্টু মিষ্টি ছেলেটাকে আমি ভালবাসি
তাতে কোনো সন্দেহ নেই
কিন্ত তার চেয়ে হাজারগুন বেশি ভালবাসি
আমার গোলাপ চারাটি
যার প্রতিটি নতুন পাতার আগমনের
প্রতীক্ষায় থাকি আমি
ছেলেটি বড় হয়ে হয়তো মানুষ(!) হবে
আর চারাটি নিশ্চই হবে সুরভিত ফুলে ঢাকা গাছ
২৩.০২.২০১৭

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬

সবই করি

পাগলা আমি পাগলামিটা আর করিনা
অভাব হলেও আর কখনো ধার করিনা
কারো কথায় আগের মতো আর নাচিনা
স্বপ্ন-ঘেরা দিনগুলোকে আর যাচি না
সবার জন্য বাঁচবো বলে আর বাঁচি না
সবার হাসির খোরাক হতে আর হাসি না
অসংগতি দেখলে পরেও আর কাঁশি না
ভালবাসি বলেই ভালো আর বাসি না
বেহিসাবী জীবন পথে আর চলি না
আপন পথের শপথ হতে আর টলি না
বেফাঁস কথা হাটের মাঝে আর বলি না
কুঁড়িয়ে কোনো কাঁন পেলেও আর মলি না
ডলা দেবার জিনিস পেলেও আর ডলি না
স্বপ্নগুলো মনের সূতায় আর বাঁধি না
হৃদয়-বীনে প্রেমের সুরটি আর সাধি না
লক্ষ-কোটি কষ্ট পেলেও আর কাঁদি না
আগের মতো কোনো কিছুই ফিল করি না
অহেতুক আর সময়গুলো কিল করি না
জীবন ঘুড়ির সূতোর নাটাই ঢিল করি না
অবাঞ্চিত কারো সাথেই ডিল করি না
স্বপ্নগুলো বাস্তবতায় মিল করি না
অনুভবের রং-তুলিতে রং করি না
দুঃখের মাঝে সুখে থাকার ঢং করি না
ছোট ছোট ব্যাপার গুলো লং করি না
হেঁড়ে গলায় বাথরুমেতে সং করি না
কিছুই আমি করি নাতা'ও হচ্ছে সবই করা
বারেবারে বাঁচতে গিয়ে হচ্ছে কেবল মরা
১৯.০৯.২০১৩

থাক্, বলবো না!

ফেলে আসা বিবর্ন সময়ে আলো ফেললে
তাতে কি বর্তমান আলোকিত হয়, হয় না
অতীত ভুলের আবর্জনা ঘাটলে
দুর্গন্ধই ছড়ায় কেবল
সুদীর্ঘ অবহেলায় পরিপাটি পথে
শ্যাওলার যে আস্তরণ পড়ে
তা পরিষ্কার করতে যাওয়া বিরম্বনাই শুধু
তবে কেন অনাহুত অতীতের জাবর কাটা
জ্বালাময় স্মৃতিকে বিস্মৃতির আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলা
সেই কি ভালো নয়?
প্রতিটি বর্তমান ক্রমাগত অতীত হয়
বিবিধ বর্ণের অতীত, বহুবিধ জ্বালাময়
বিস্মৃতির আস্তাকুড় ভরে ওঠে স্মৃতির আবর্জনায়
অস্তিত্বের শংকা বাড়ে
দ্রোহের অনলে সবাক হতে চায় চিত্তের প্রকাশ
কী এক অসাড়তায় থমকে যায় পরক্ষণেই
বিস্মৃতির আবর্জনায় স্বত্ত্বাকেই বিলীন করতে
উদ্যত হয় মন
কী লাভ দ্রোহের বহিঃপ্রকাশে
থমকে যাওয়াই শ্রেয়তর হয়তো!
২০.০৯.২০১৬