মঙ্গলবার, জুলাই ১৯, ২০১৬

রুল-ব্রেকিং সনেটস

সনেট 

কবিতাকে বেঁধে দিলে চৌদ্দটি লাইনে
ছন্দ মিলিয়ে নিলে বামে আর ডাইনে
ছয়-আটে ভাগ করে আবেগের সুর
সনেট ছড়ায় সুধা প্রাণে সুমধুর
সুরভিত কথারাশি ফুলশাখে দোলে
অনুভুতিগুলো এসে বাতায়ন খোলে
পরিমিত গন্ডিতে অসীম অনুভব
সুর-লয়-ছন্দে মহা মিলন বৈভব
অমৃত ধারার সুর ও শব্দ চয়নে
পুলক বিরাজ করে হৃদয় গগনে
তৃষিত ব্যকুল মন অমৃতের আশে
যখনই আকুল হয় শব্দ প্রকাশে
অমৃতের সুধা এসে মিটায় সে তৃষা
অস্থির ব্যকুল চিত পায় পথ দিশা

এইতো এখানে সব 

এইতো ভাসছি এইতো ডুবছি জলে
এইতো জীবন এইতো মরণ পলে
এইতো হাসছি এইতো বাসছি ভালো
এইতো রঙিন এইতো সফেদ কালো
এইতো আমরা এইতো তোমরা সবে
এইতো এখানে মধুর মিলন হবে
এইতো সকাল এইতো বিকেল বেলা
এইতো আঙিনা এইতো শিশুর মেলা
এইতো সাগর এইতো নদীর ঢেউ
এইতো সকলে এইতো নইযে কেউ
এইতো তুষার এইতো সবুজ বন
এইতো ফাগুন এইতো আগুন ক্ষণ
এইতো তুফান এইতো প্রলয় ঝড়
এইতো এখানে এসেছে রবির কর

সময় হনন

আপনারে অবহেলে হারিয়েছি পথ
অপচয় সময়েরই খুঁজে দ্বৈরথ
কেউ কেউ ক্ষনিকের তরে কাছে এসে
নিয়ে গেল সবকিছু মিছে ভালবেসে
জগতের ছলাকলা বুঝিনিতো আমি
তাইতো জীবনতরী গিয়েছে যে থামি
এযাবত কালে যাকিছু শিক্ষা জগতে
তাসব গাঁথা হৃদয়ের প্রতি পরতে
ভুলে ভুলে ভরা পিছনের পথ যত
কেবল আমার হৃদয়ে এঁকেছে ক্ষত
ওসব যাতনা ঠেলে ফেলে বহুদূরে
আগামী ক্ষণকে মাতাবো নতুন সুরে
মধুর সময় অপচয় করা নয়
সময় হননে আসে শুধু পরাজয়

পথের কাঁটা .

আর কারো ছলনাতে টলবেনা মন
আপনারে সৃজিবার করেছি যে পণ
অতীতের পথে পথে ব্যথা পেয়ে শত
জীবন পেয়েছে ঢের জ্ঞান অবিরত
সে জ্ঞানকে পুঁজি করে আগামীর ক্ষণে
পেরোবই বাধা যত সমুখের রণে
অযুত সোনালী ক্ষণকে করেছি মাটি
তাইতো পুড়েছি পুড়েই হয়েছি খাঁটি
আর নয় কভু ঘাটে ঘাটে ঘাটাঘাটি
এবার জীবন করবোই পরিপাটি
যদিও জানি সে পথের মাঝেতে কাঁটা
তবুও সেখানে আমার সুদৃপ্ত হাঁটা
পথের মাঝারে বাধারা যতটা থাক
হৃদয় তোড়েতে নিমেষে নিপাত যাক

পুনরায় জীবনের পথে .

বেহিসাবী পথে সতত ভ্রমেছি ভুলে
তাইতো এখন কেউ নাই মোর কূলে
জীবন নদীর মাঝখানে থামা তরী
ঋণে ঋণে আজ সে নাও গিয়েছে ভরি
কান্ডারী হীন কান্ডজ্ঞানহীন চলাতে
কন্টকহার পরেছি আমার গলাতে
থামা তরীখানি তীরে ফেরানোর পণে
নেমেছি আবার নিজেরই সাথে রণে
আর থাকবোনা অলসতা মাঝে পরে
আপনার চিতে বোকার ভুবন গড়ে
ভুল পথে আর এগোবনা কোনো কালে
নিজে বুঝে নেবো যালেখা রয়েছে ভালে
সফলতা আসে সমুখ চলার গানে
তাকাবোনা তাই কভু পিছনের পানে

প্রেমের বারতা 

তোমাকে বলব বলেই হয়ত আজ
কথার কলিরা সাজছে নতুন সাজ
হৃদয় গহীনে বইছে আবেগ ধারা
আমাকে কেবল করছে পাগল পারা
বাজছে অযুত সুরের লহরী প্রাণে
প্রেমের বারতা জানাতে তোমায় গানে
তোমাকে ঘিরেই আমার স্বপন সাজে
তোমাকে গেঁথেছি আপন পরাণ মাঝে
হৃদয় মাঝারে সকল সুরভী তুমি
তুমিই আমার প্রেমের অমৃত ভূমি
সকল সকাল দুপুর বিকেল সাঁঝে
তোমাকে পেয়েছি প্রতিটি প্রহর মাঝে
এমন করেই হৃদয়ে রাখবো বেঁধে
অনাদি কালের প্রেমের সুরটি সেধে

পালা-বদল 

সতত সচল রথটি গিয়েছে থামি
কোথায় ছিলাম কোথায় গিয়েছি নামি
পথের ধুলায় আছড়ে পরেছে ক্ষণ
হারিয়ে ফেলেছি যাছিল জীবনে পণ
কোথায় ভিড়বে জীবন তরণী মোর
থামবে কখন বাণের জলের তোড়
নিয়তি আমায় ভিড়াবে কখন তীরে
আবার বাঁশরী বাজবে আমার নীড়ে
পাখিরা আবার গাইবে মধুর সুরে
সকল বেদনা নিমেষে মেলাবে দূরে
সুখেরা আসবে দুঃখের মেঘকে ঠেলে
ফুলেরা ফুটবে হাজার পাপড়ি মেলে
দুঃখের পরেতো সুখের ফেরার পালা
জ্বালার পরেই গলেতে প্রেমের মালা

ফাগুন এলে 

ফাগুন আসবে আগুন ছড়াতে মনে
আগুন ছড়াতে পলাশ শিমুল বনে
বনের পাখিরা গাইবে মনের সুখে
ফাগুন মধুর প্রলেপ মাখবে দুঃখে
দুঃখের প্রাচীর ভেঙেই আসবে সুখ
ফাগুন দেখবে আগুন ছড়ানো মুখ
ফাগুন রঙের বাসর সাজায় প্রাণে
সুরের লহরী ছড়ায় কোকিল গানে
সুরভি বিলায় হরেক কুসুম-কলি
মধুর মিলনে মাতেযে সেথায় অলি
আকাশ রঙিন বাতাস সুরভি-ময়
সকল আবেগ নিমেষে কবিতা হয়
এখানে বিবিধ মাসের বছর গোনা
ফাগুনে শুধুই মধুর স্বপন বোনা

বিদায় বেলা 

জীবন দিয়েছ জীবনী দাওনি পিতা
মরার আগেই জ্বলছে আমার চিতা
পারিনা দাড়াতে সমুখে বাড়াতে আর
জগত আলয়ে লাগছে সবই ভার
মায়ার বাঁধন পারেনা জড়াতে মোরে
আঁধার পাথারে ঘুরছি একাকী ঘোরে
কিছুই আমার লাগেনা এখানে ভালো
বিষাদ জীবনে সবই আঁধার কালো
এখন আমার শুধুই তোমাকে চাই
তোমারে প্রণমি চরণে নেবযে ঠাঁই
বিদায় বেলার গুনছি প্রহর আজ
তোমার আরতি কেবল আমার কাজ
কখন আমার যাবার সময় হবে
তোমার পূজার কুসুম করেযে লবে

©  প্রদ্যোত

কোন মন্তব্য নেই: