সোমবার, জুলাই ১৮, ২০১৬

একুশোত্তম

একুশ তুমি প্রদীপ্ত চেতনায়,
আগুন জ্বালিয়ে কৃষ্ণচূড়ার ডালে,
ভাষার দাবিতে শ্লোগান-মূর্ছণায়,
রাজপথ করে রঞ্জিত লালে লালে।
এগিয়ে নিয়েছো বিপ্লবী সন্তানে,
মা ও মায়ের ভাষারই সন্মানে,
উন্নত শিরে তারুণ্য হেটে চলে,
বুলেট-বিদ্ধ শুদ্ধ রক্ত-স্নানে।
একুশ তুমি সালাম, রফিক,
মিশে আছো কতো নামে,
মায়ের ভাষাকে কিনেছিল যারা
বুকের খুনের দামে।
অশ্রু-নয়নে প্রভাত-ফেরীতে
কোটি বাঙালীর প্রাণে,
মিশে আছো তুমি শহীদ-বেদীতে
পলাশ-শিমুল ঘ্রানে।
তোমাতেই প্রাণ, বিদ্রোহ
আর ঐক্যের হাতিয়ার,
এ মাটির বুকে মুক্তি
আনতে গর্জেছে বারবার।
একুশ তুমি বুকের রক্তে
রাঙায়ে দিয়েছো বেশ,
স্বাধীনতা তুমি সাগর রক্তে
গড়েছো বাংলাদেশ।
মনে মনে দীপ জ্বেলেছো
একুশ করেছো অঙ্গীকার,
রক্ত-সূর্য এ মাটি
ফুঁড়ে উঠবেই একবার।
স্বাধীনতা এলো বিজয়ের পথে,
পরাধীন হলো শেষ,
বিজয় এসেছে বজ্রের মতো,
ভেঙে ভয়-বিদ্বেষ।
তবুও বিজয় পাইনিকো যেন,
হাহাকার শত প্রাণে,
ছুটে যাই তাই শহীদ মিনারে,
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানে।
যখন সমুখে দন্ডায়মান
বিবিধ অত্যাচার,
ঐক্যের সুরে বিদ্রোহী হই,
প্রেরণা শহীদ মিনার।
মুঠো মুঠো প্রাণ তুলে নেই সেথা,
বলিষ্ঠ চেতনার,
দ্রোহ আর ক্ষোভে প্রতিজ্ঞ হই,
শৃংখল ভাঙবার।
ফাগুনের সেই
আগুন ছড়ানো দিন,
ভুলি নাই মোরা
সেই সে রক্ত ঋণ।
তোমার প্রেরণা
অনূরণ তোলে গানে,
ছ’ দশক পরে শত-সহস্র
নবীণ সতেজ প্রাণে।
একুশ তুমি এমনি করেই
যুগ-যুগান্ত ধরে,
জাগিও প্রেরণা তরুণ হৃদয়ে,
প্রতি বাঙালির ঘরে।

০২.০২.২০১২  © প্রদ্যোত
(কৃতজ্ঞতাঃ আমার প্রাণপ্রিয় মামা, এই কবিতার ১২টি লাইন যিনি আমাকে উপহার দিয়েছেন এবং পূর্ণাঙ্গ কবিতাটি লিখতে উৎসাহিত করেছেন)

কোন মন্তব্য নেই: