সোমবার, জুলাই ১৮, ২০১৬

খাচ্ছি সবই

খাবার জন্যই যেন জন্মেছি আমরা
খাদ্য-চক্রের অংশ ছাড়া আমরা কিছুইনা
নিজেদের কেমন করে দাবি করি
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসাবে?
হ্যা, করা যায় সে দাবি-
কারণ, আমরা সর্বভুক
যে সব খেয়ে ফেলতে পারে নির্দিধায়
সে'ই তো শ্রেষ্ঠ, নয়কি?
বাঘ বা সিংহ ঘাস-লতা-সবজি খায়
বলে শুনিনি কখনো।
গরু বা ছাগলকে মাংশ খেতে
দেখেছেন কেউ?
অথচ, আমরা সব খাই।
ঘাস-লতা-গুল্ম-সবজি-মাংশ সব!
পৃথিবীর কোনো প্রাণী স্বজাতিকে মারে?
আমরা মারি!
হাজারো অত্যাধুনিক অস্ত্র বানাই
নিজেদের মারতে।
মেধাবী ছেলেগুলোকে মিলিটারি কমান্ডো বানাই
মনুষ্যকুল নিধনের জন্য!
কি খাইনা আমরা!
আজন্ম ক্ষুধা নিয়েই এসেছি ধরাধামে
আপনাকে যদি বলি, 'আপনি একটা
গরুরবাচ্চা!'
নিশ্চই তেড়ে আসবেন আমার দিকে,
শিং কাঁত করে!
আসলেই কি আমরা গরু বা ছাগলের
বাচ্চা নই!
পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর সন্তান
তার মাতৃস্তন্যের দাবিদার।
শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধই পারে একটি সন্তানকে
সাবলীল, মেধাবী, শক্তিমান, চৌকস ও
রোগমুক্ত রাখতে।
আমাদের মায়েরা -
শারীরিক সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে
শিশুকে নিজের স্তন্য পান করাতে নারাজ
বিকল্প হিসাবে গরু বা ছাগলের দুধ
ফিডারে ভরে খাওয়ান!
'গরুর দুধ পান করবে বাছুর,
ছাগলের দুধে তৃষ্ণা মিটাবে
ছাগলছানা' - এটাই প্রাকৃতিক।
আমরা তাদের প্রাপ্য হতে বঞ্চিত করে,
মুখে ঘাস তুলে দিয়ে,
নিজেরা পান করি সানন্দে!
হায়রে খাদ্যাভ্যাস আমাদের!
আমরা পশুত্তম!
অতঃপর, সেই ছাগল বা গরুটিকে
অতি পাশবিকভাবে হত্যাকরে,
নানান আকৃতিতে টুকরো টুকরো করে
কেঁটে,
রকমারি মশলায় মাখিয়ে,
বিবিধ কৌশলে রেঁধে,
ভক্ষণ করি মহানন্দে!
আহ! রানের মাংশের কি স্বাদ!
কলিজা-মগজ দিয়ে কত বাহারি খাবার!
ঘ্রানেই জিভে জল চলে আসে!
আচ্ছা, আমরাও তো প্রাণী, তাইনা?
এবং শ্রেষ্ঠ প্রাণী বলে দাবি করি!
তবে, নিশ্চই আমাদের মাংশ
সবচেয়ে সুস্বাদু হবে!
আরে, তাহলে আর দেরী কেন!
আসুননা, ঝাঁপিয়ে পড়ি একে অপরের
প্রতি।
কেঁটে টুকরো টুকরো করে,
বাহারি মসলায় মেখে,
তৈরী করি সুস্বাদুতম খাবার!
কচকচ করে খাই নিজেদের মাংশ!
আরে, শ্রেষ্ঠ প্রাণীর মাংশ যদি না'ই
খেলাম শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসাবে জন্মই
তো বৃথা!

© প্রদ্যোত

কোন মন্তব্য নেই: